, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


চিনির দাম বাড়ায় বন্ধের উপক্রম মৌমাছির খামার

  • আপলোড সময় : ১১-০৬-২০২৩ ১০:৩৯:০২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৬-২০২৩ ১০:৩৯:০২ পূর্বাহ্ন
চিনির দাম বাড়ায় বন্ধের উপক্রম মৌমাছির খামার
দেশে চিনির দাম বাড়ার কারণে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার একমাত্র মৌমাছির খামার বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সঙ্গে উৎপাদিত মধু বিক্রির নির্ধারিত বাজার না থাকাকেও দায়ী করছেন খামারি। লোকসান হওয়ায় ৯ বছর ধরে মৌচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করা সাদা মিয়ার ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। 

অথচ তিনি মধু সংগ্রহের জন্য মৌ-বাক্স নিয়ে ঘোরেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এতে ফসলের উৎপাদনও বাড়ে। উপজেলার টিয়াগাছা গ্রামে ২০১৪ সালে মৌচাষ শুরু করেন সাদা মিয়া। তখন ২০টি বাক্স ছিল তাঁর। প্রায় দেড় লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে এ ব্যবসায় নামেন তিনি। 

বর্তমানে তাঁর মৌ-বাক্স ১৬০টি। প্রতিটিতে মৌমাছি আছে ১৮ থেকে ২০ হাজার। তিনি বছরে দুই লক্ষাধিক পিস মৌমাছি বিক্রি করেন। সাদা মিয়া জানান, নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত চলে মধু সংগ্রহ। অন্য সময় মৌমাছিকে চিনি খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হয়। এ সময় মধু পাওয়া যায় না। 

বছরের সাত মাস চিনি কিনতে হয়। খামারে প্রতি মাসে ৫০ কেজির ১২ বস্তা চিনির প্রয়োজন। সাত মাসে ৮৪ বস্তা বা চার হাজার ২০০ কেজি চিনি কিনতে হয়। এখন চিনির বাজার বেশ চড়া। প্রতি কেজি ১৩৫ টাকায় কিনে মৌমাছি পালন সম্ভব না।

এদিকে পাঁচ মাস মধু সংগ্রহ করেন সাদা মিয়া। সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে জয়পুরহাটে যান। ধনিয়া ও কালোজিরা ফুলের মধু সংগ্রহে যান ফরিদপুর ও শরীয়তপুরে। লিচু ফুলের মধু সংগ্রহে যান দিনাজপুরে। মিষ্টি কুমড়া ফুলের মধু সংগ্রহ করেন ঠাকুরগাঁও থেকে। তিল ফুলের মধুর জন্য পঞ্চগড়ে ও অন্যান্য ফুলের মধু সংগ্রহে যান সুন্দরবনে।

এ সময় সাদা মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে চার হাজার ২৮০ কেজি মধু সংগ্রহ করেছেন। রিফাইনের যন্ত্র থাকলে উৎপাদন আরও বাড়ত। বিভিন্নভাবে মধু বিক্রি করেছেন ১০ লক্ষাধিক টাকার। এরপরও লোকসান গুনতে হচ্ছে। কারণ মধু বিক্রির জন্য নির্ধারিত বাজার নেই। থাকলে বিক্রি বাড়ত।

জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষি, বাণিজ্য বা অন্যান্য মেলায় স্টল সাজিয়ে মধু বিক্রি করেন খামারি। বিভিন্ন কোম্পানি পাইকারিতে কিনলেও উপযুক্ত দাম দিতে চায় না। খুচরা গ্রাহক কেনেন কম। অনলাইনে বিক্রি হলেও ক্রেতার সংখ্যা বেশি না। 

স্থানীয় ভাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান মাফু বলেন, সাদা মিয়ার খামারে এলাকার অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাঁকে সহযোগিতা করে টিকিয়ে রাখা সবার দায়িত্ব। এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বসুনিয়া বলেন, মৌমাছির কারণে পরাগায়নের ফলে ফসলের উৎপাদন ভালো হয়, ক্ষতি হয় না। মৌমাছি থাকলে সে এলাকার ফসলে ক্ষতিকর পোকামাকড় কমবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে। এজন্য বেশি বেশি মৌ-খামারি প্রয়োজন। যে সাত মাস মধু উৎপাদন হয় না, তখন চিনি খাইয়ে মৌমাছি বাঁচিয়ে রাখতে হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মতিউল আলম বলেন, মধু সংগ্রহের সুবিধার্থে সরকারিভাবে রিফাইন যন্ত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এটির বরাদ্দ পেলে বাড়তি মধু উৎপাদন হবে। মৌচাষি সাদা মিয়া যাতে ব্যবসায় টিকে থাকতে পারেন, সে উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে প্রণোদনার ব্যবস্থা করবেন তিনি।
সেনাকুঞ্জে কুশল বিনিময় করলেন ‍ড. মুহাম্মদ ইউনূস-খালেদা জিয়া

সেনাকুঞ্জে কুশল বিনিময় করলেন ‍ড. মুহাম্মদ ইউনূস-খালেদা জিয়া